| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ফেব্রুয়ারি আমাদের আবেগের মাস : মুফতী ফয়জুল করীম 


ফেব্রুয়ারি আমাদের আবেগের মাস : মুফতী ফয়জুল করীম 


রহমত ডেস্ক     21 February, 2022     04:59 PM    


ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ভাষা হচ্ছে মনের ভাব প্রকাশ করার সবচেয়ে উত্তম একটি মাধ্যম। শুধু মানুষই ভাষা ব্যবহার করে না; পৃথিবীতে যত প্রাণী রয়েছে সবারই নিজস্ব ভাষা রয়েছে এবং তারা সবাই তাদের জাত, ধর্ম এবং গোত্রের মধ্যে নিজস্ব ভাষাতেই কথা বলে। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা, আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার। বছর ঘুরে আবার এসেছে ফেব্রুয়ারি মাস। আমাদের ভাষার মাস, আবেগের মাস। শুধু এ মাসটি এলেই আমরা বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করার অঙ্গীকার করি এবং ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনকরি। এর পর আবার যেমন চলছিল তেমনি চলে। প্রশ্ন হলো- বাংলা ভাষাকে সঠিকভাবে ব্যবহার না করা, বাংলাকে অবহেলা কিংবা অন্য ভাষার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ আমাদের কি আদৌ সঠিক পথে নিয়ে যাচ্ছে?

আজ (২১ ফেব্রুয়ারি) সোমবার সকাল ১০টায় পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে এসব কথা বলেন। আলহাজ্ব মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ আল-আমিন সোহাগের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলনের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ নূর-উন-নাবী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতী শওকত ওসমান, অর্থ সম্পাদক ক্বারী মুহাম্মাদ নাছির উদ্দীন, প্রচার সম্পাদক মুহাম্মাদ তসলিম উদ্দিন রুবেল, প্রকাশনা সম্পাদক কৃষিবিদ মুহাম্মাদ নাজমুল ইসলাম, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুহাম্মাদ আবু বকর সিদ্দিক, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুহাম্মাদ শাহ পরান, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক এইচ এম গোলাম রাব্বি, মহিলা ও পরিবার সম্পাদক মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহাব, উপ সম্পাদক হাসানুজ্জামান হিমেল প্রমুখ।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকে পাকিস্তানি শাসক বাংলা ভাষাকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে, কিন্তু পারেনি। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে রক্ষার জন্য আন্দোলনকারী কয়েকজন মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেন রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত, শফিকসহ আরও অনেকে। পাকিস্তান সরকার ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ভাষা আন্দোলন থেকেই জাগ্রত হয় জাতীয় চেতনা। আর এরই ফলস্বরূপ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় দেশ। তাই বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার ও প্রচলন নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, ১৯৮৪ সালে এক নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছিল, 'সব সাইনবোর্ড এবং গাড়ির ফলক বাংলায় হতে হবে। তবে কেউ প্রয়োজন মনে করলে নিচে ছোট করে ইংরেজিতে লিখতে পারবে।' এটা সত্য যে, গাড়ির নম্বর ফলক এখন প্রায় একশ' ভাগই বাংলায় হয়ে গেছে। কিন্তু সাইনবোর্ড লেখার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। ছোটখাটো দোকান, হোটেল বাব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাংলায় সাইনবোর্ড দেখা গেলেও সরকারী অনেক দফতর, অভিজাত হোটেল, রেস্তোরাঁ, বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা শিল্প কারখানার সাইনবোর্ড এখনও ইংরেজিতে লেখা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে নদীদূষণ এবং ভাষাদূষণ দুটোই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এবং ক্রমাগত বাড়ছে। যে ভাষার জন্য আমাদের পূর্বসূরিদের রক্ত দিতে হয়েছে, যে ভাষার জন্য জীবনবাজি রেখে আন্দোলন করে রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত, শফিকরা শহীদ হয়েছেন- আমরাকি সেই বাংলা ভাষাকে, বাংলা ভাষার চর্চা আদৌ সঠিকভাবে করতে পেরেছি? বর্তমান বানানরীতি নিয়েও রয়েছে নানা সমস্যা। বাংলা বানানের ভুল প্রয়োগ চলছে। এই বানানের কারণে অনেক শব্দের অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়। অন্যদিকে, বাংলার সঠিক উচ্চারণেও রয়েছে অনেক সমস্যা। নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য এসবই দুর্ভাগ্য এবং লজ্জাজনক।